উল্লেখ্য তারাবি নামাজের ৪ রাকাত পর পর পড়ার এ দোয়াটি ব্যাপক প্রচলিত। তবে এ দোয়ার সঙ্গে তারাবি নামাজ হওয়া কিংবা না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। তারাবি নামাজ ও তারাবি নামাজের পর যে দোয়া পড়া হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
তারাবি নামাজের নিয়ম
আমরা সকলেই জানি তারাবি নামাজ দুই রাকাতে আদায় করতে হয়। যারা আরবি ভালো জানে তারা তারাবি নামাজের জন্য আরবি নিয়ত ও যারা আরবি কম জানে তারা বাংলা নিয়ত করে থাকেন। তারাবিহ আরবি শব্দ এর অর্থ হচ্ছে বিশ্রাম, আরাম । তারাবি নামাজের চার রাকআত পরে পরে আপনি একটু সময় বিশ্রাম নিতে পারেন। পরবর্তীতে আবার নামাজ শুরু করতে পারেন। তবে বেশি সওয়াবের লাভের জন্য আপনি নবী করিম (সা) রমজান জুড়ে যে দুয়াগুলো পড়তে বলেছেন ওইগুলো পড়তে পারেন। তারাবিহ নামাজের পর সাইয়্যিদুল ইসতেগফার পড়তে পারেন।
তারাবি নামাজের নিয়ত
কোনো কাজ বা নামাজ শুরুর পূর্বে অবশ্যই নিয়ত করা উচিত। তারাবি নামাজের কি নিয়ত আমরা অনেকেই জানি না। তাই নিচে তারাবি নামাজের নিয়ত তুলে ধরা হল।
আরবি নিয়তঃ নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা, রাকাআতাই সালাতিত তারাবি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবার।
বাংলা অর্থঃ আমি কেবলামুখী হয়ে দুই রাকাত তারাবি সুন্নত নামাজের নিয়ত করছি; আল্লাহু আকবার।
তারাবি নামাজের নিয়ত আরবিতেই করতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যারা আরবিতে নিয়ত করতে পারে না, তারা বাংলাতে তারাবি নামাজের নিয়ত করবে।
তারাবি নামাজের দোয়া
৪ রাকাত তারাবি আদায় করে বিশ্রাম বা বিরতির পর ব্যাপক প্রচলিত একটি দোয়া রয়েছে। যা দেশের প্রায় মসজিদে পড়া হয়। এমন নয় যে, এ দোয়া না জানলে বা তারাবি নামাজে না পড়লে নামাজ হবে না। বরং যে কোনো দোয়াই পড়া যাবে। তবে এ সময়টিতে কুরআন-সুন্নাহর দোয়া, তাওবাহ-ইসতেগফারগুলো পড়াই উত্তম।
সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।
আরো দেখুন…
তারাবি নামাজ কয় রাকাত
আমাদের দেশে রমজান মাস শুরু হলেই তারাবির নামাজ কয় রাকাত পড়া হবে ২০ নাকি ৮ রাকাত এই নিয়ে মুসলিমদের মাঝে বিভিন্ন তর্ক বিতর্ক শুনা যায়। বিভিন্ন আলেম বিভিন্ন রকম হাদিস ও যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে থাকেন।
তারাবীহ নামাজ হল মহান আল্লাহ তালাকে খুশি করার জন্য মুসলমানদের দ্বারা সম্পাদিত একটি বিশেষ প্রার্থনা। তারাবীহ নামাযের সময় যে রাকাত (নামাযের একক) করা হয় তা মসজিদ বা চিন্তাধারার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।
সাধারণত, তারাবীহ নামাজ ২০ রাকাত নিয়ে গঠিত, যেটি প্রতিটি ২ রাকাত করে পরতে হয়। তবে আপনার যদি নামাজ পরতে কোনো অসুবিধা থাকে, সেক্ষেত্রে আপনি কম ৮ কিনবা ১২ রাকাত নামাজ পরতে পারেন। যেমন, অসুস্থ হলে, খুব জরুরী কোন কাজ থাকলে ইত্যাদি।
পবিত্র রমজান মাসে আমরাও যতবেশি আমল করব মহান আল্লাহতালা খুশি হয়ে তার থেকে 27 গুণ বেশি সওয়াব আমাদের আমলনামায় লিপিবদ্ধ করবেন। তাই, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে তারাবীহ নামায হল সুন্নত নামায, এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের মত ফরয নয়। মুসলমানদেরকে রমজান মাসে তারাবিহ নামায পড়তে উৎসাহিত করা হয় কারণ এটি ক্ষমা চাওয়ার এবং আধ্যাত্মিক পুরস্কার লাভের একটি উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়।
আশাকরি আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা অবশ্যই তারাবি নামাজ সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছেন। আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার কোনো উপদেশ বা পরামর্শ থাকলে আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
তারাবি নামাজ সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
তারাবির নামাজ কি চার রাকাত পড়া যাবে?
উত্তরঃ তারাবীহ, অন্যান্য স্বেচ্ছামূলক নামাজের মতো, প্রতি 4 রাকাত পরে বিশ্রাম নেওয়ার ক্ষমতা সহ এক সময়ে 2 রাকাতের সেটে প্রার্থনা করা হয়।
মক্কায় তারাবির নামাজ কত রাকাত?
উত্তরঃ সহীহ আল বুখারীর একটি হাদিস অনুসারে, তারাবিহ নামায আট রাকাত।
তারাবির নামাজের নিয়ত কিভাবে করতে হয়?
উত্তরঃ নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা, রাকাআতাই সালাতিত তারাবিহ সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবার। অর্থ: আমি কেবলামুখি হয়ে দু’রাকাত তারাবির সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজের নিয়ত করছি; আল্লাহু আকবার।
১০ রাকাত তারাবি কি হারাম?
উত্তরঃ আমরা উপরে প্রদত্ত রেফারেন্স থেকে দেখতে পাচ্ছি, কুরআন বা হাদীসে তারাবীহের রাকাত সংখ্যার জন্য কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই এবং তাই আপনি যত খুশি নামাজ পড়তে পারেন।