তাসখন্দ চুক্তি কি

তাসখন্দ চুক্তি কি? ও তাসখন্দ চুক্তির শর্ত কি কি ছিল?

তাসখন্দ চুক্তি হচ্ছে প্রথম ভারত পাকিস্তানের মধ্যে শান্তিচুক্তি বা সমঝোতা চুক্তি. এই চুক্তির মাধ্যমে সর্বপ্রথম ভারত পাকিস্তান কাশ্মীর নিয়ে দ্বন্দ্বের সমাধান হয়েছিল। তাসখন্দ চুক্তি কি? এই চুক্তি কবে স্বাক্ষর করা হয়েছিল? এবং তাসখন্দ চুক্তি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। 

তাসখন্দ চুক্তি কি?

১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ ভেঙ্গে ভারত-পাকিস্তান দুটি নতুন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। সেই তৎকালীন সময়ে থেকেই কাশ্মীরকে নিয়ে ভারত-পাকিস্তান মাঝে বিভিন্ন রকম সামরিক যুদ্ধ শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে ভারত পাকিস্তানের উত্তেজনা কমানোর জন্য ১৯৬৬ যে চুক্তি করা হয় ঐতিহাসিকরা তাকে তাসখন্দ চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

তৎকালীন সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী এবং পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি শান্তি চুক্তি বা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছিল তাকেই তাসখন্দ চুক্তি বলে। ১৯৬৬ সালের ১০ই জানুয়ারি ঐতিহাসিক এই চুক্তির ফলে ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে রক্তক্ষয়ী ১৭ দিনের যুদ্ধের অবসান ঘটে। 

ঐতিহাসিক তাসখন্দ চুক্তিটি সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কোসিগিনের নেতৃত্বে উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে সম্পন্ন হয়েছিল। সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রি পাকিস্তান ও ভারতকে উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে যুদ্ধ বন্ধে আমন্ত্রণ জানান। উক্ত আলোচনায় উভয় দেশ তাদের সমস্ত সশস্ত্র বাহিনীকে প্রত্যাহার, কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন, অর্থনৈতিক, উদ্বাস্তু এবং অন্যান্য প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করতে সম্মত হয়। একপর্যায়ে ভারত ও পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দ সমঝোতায় রাজি হওয়ায় ঐতিহাসিক তাসখন্দ চুক্তিটি সম্পন্ন হয়। 

তাসখন্দ চুক্তি কি

তাসখন্দ চুক্তির কারন

১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ ভেঙ্গে ভারত-পাকিস্তান দুটি নতুন রাষ্ট্রের উদ্ভব হওয়ার পর কাশ্মীরকে নিয়ে আবার সামরিক যুদ্ধ শুরু হয়। কাশ্মীর হচ্ছে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ। যে প্রদেশে  ব্যাপক পরিমাণে পর্যটক আসে, ফলমূল উৎপাদিত হয় যার কারণে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীরকে নিয়ে বিভিন্ন দ্বন্দ্ব তৈরি হয় এবং এক পর্যায়ে উভয় দেশ কাশ্মীর দখল নিয়ে সামরিক যুদ্ধ ঘোষণা করে। এই যুদ্ধের ফলে কাশ্মীরের সাধারন জনতা ব্যাপক পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

১৯৬৫ সালের আগস্টে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কাশ্মীর অঞ্চলকে ঘিরে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধের সংগঠিত হয়। 

আরো দেখুন…

তাসখন্দ চুক্তির শর্ত কি কি ছিল?

১৯৬৬ সালে সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কোসিগিনের নেতৃত্বে উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে দুই দেশের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীকে প্রত্যাহার, কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন, অর্থনৈতিক সমাধান করার লক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। নিচে ঐতিহাসিক তাসখন্দ চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ শর্ত গুলো তুলে ধরা হল। 

  1. ভারত ও পাকিস্তানের সৈন্যরা পুনরায় নিজস্ব  অবস্থানে ফিরে যাবে।
  2. কেউ কারো অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।
  3. যুদ্ধবন্দীদের সুশৃঙ্খলভাবে স্থানান্তর করা হবে।
  4. দুই পক্ষের নেতৃবৃন্দ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি সাধনে কাজ করবে।
  5. দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার হবে।

প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশাকরি আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে তাসখন্দ চুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছেন। আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভাল লেগে থাকলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করে অন্যকে তথ্যগুলো সংগ্রহ করার সুযোগ করে দিবেন, ধন্যবাদ।

তাসখন্দ চুক্তি সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

তাসখন্দ চুক্তির প্রস্তাব কে করেন?

উত্তরঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী।

তাসখন্দ অর্থ কি?

উত্তরঃ  টলেমি দ্বারা উল্লিখিত “Stone Tower” এবং সিল্ক রোডের অন্যান্য প্রাথমিক বিবরণ দ্বারা এই এলাকাকেই উল্লেখ করা হয়েছে (“তাশখন্দ” অর্থ “পাথরের শহর”)। এই টাওয়ারটিকে ইউরোপ ও চীনের মধ্যস্থল হিসেবেও চিহ্নিত করা হতো।

ভারত পাকিস্তানের মধ্যে তাসখন্দ চুক্তি কবে হয়?

উত্তরঃ তাসখন্দ, 10 জানুয়ারী 1966।

তাসখন্দ কোন দেশে অবস্থিত?

উত্তরঃ তাসখন্দের প্রাচীন শহরটি দেশের রাজধানী শহর এবং মধ্য এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম শহর। উজবেকিস্তানের পূর্ব অংশে অবস্থিত, তাসখন্দ সোভিয়েত আমলে এবং তার পরে রূপান্তরের কারণে স্থাপত্য ও ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।

তাসখন্দের পুরাতন নাম কি?

উত্তরঃ মধ্যযুগের প্রথম দিকে শহরটিকে বিঙ্কেন্ট বলা হত।

Scroll to Top