হাদীস শব্দের অর্থ কথা,বাণী,বার্তা,সংবাদ,বিষয়,খবর ও ব্যাপার ইত্যাদি। আপনারা যদি হাদিস শব্দের অর্থ কি, হাদিস কাকে বলে এবং কত প্রকার এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
হাদীস শব্দের বাংলা অর্থ কি
হাদিস একটি আরবি শব্দ। আরবি আসার শব্দ থেকে হাদিস শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। আরবী অভিধান ও কোরআনের ব্যবহার অনুযায়ী হাদীস শব্দের অর্থ কথা,বাণী,বার্তা,সংবাদ,বিষয়,খবর ও ব্যাপার ইত্যাদি।
হাদীস শব্দটি শুধুমাত্র একটি আভিধানিক শব্দ নয়। হাদীস শব্দটি মূলত ইসলামের এক বিশেষ পরিভাষা হিসাবে ব্যবহার করা হয়। সে অনুযায়ী রাসূল(সাঃ)-এর কথা,কাজের বিবরণ কিংবা কথা,কাজের সমর্থণ এবং অনুমোদন বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য পরিভাষাই হল হাদীস।
হাদীস কাকে বলে
শাব্দিক অর্থে হাদীস হল যে সব কথা, কাজ ও বস্তু পূর্বে ছিল না, এখন অস্তিত্ব লাভ করেছে। হাদীসকে মূলত ইসলামী সভ্যতার মেরুদন্ড বলা হয়। কারন মুসলিমদের মধ্যে ধর্মীয় আইন এবং নৈতিক দিক নির্দেশনার উৎস হিসেবে হাদীসকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
মহানবী সাঃ ও তার অনুপ্রাণিত খেলাফতে রাশেদীনের পরিচালকগনের নীতিগুলো হাদীসে তুলে ধরা হয়েছে। যাতে পরবর্তী মুসলিম সম্প্রদায় তাদেরকে তাদের হাদিস গুলো অনুসরণ করে জীবনকে সুন্দর ও আল্লাহর পথে চলতে পারে।
ইসলামী পরিভাষায় হাদিস হল রাসূল (সা:) এর বাণী কর্ম , মৌন অনুমোদন এবং তার চারিত্রিক ও শারীরিক গুণাবলীর নাম। পবিত্র কোরআনে হাদিস শব্দটি ২৬ বার এসেছে এবং বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
বিভিন্ন ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, হাদিস হল সাহাবায়ে কিরাম, তাবেয়ীনদের বানী কর্ম ও মৌন অনুমোদন। হাফিজ সাখাভি (রাঃ) বলেন, যা রাসূল সা. এর দিকে সম্বন্ধযুক্ত; চাই তার উক্তি হোক বা কর্ম বা অনুমোদন অথবা গুণ, এমনকি ঘুমন্ত অবস্থায় ও জাগ্রত অবস্থায় তার গতি ও স্থিতিকে হাদিস বলা হয়। আবার আল্লামা যফর আহমাদ উসমানি (রাঃ) বলেন, হাদিস হল, রাসুল সা. এর নামে কথিত কখা, কাজ অনুমোদন ও গুণ বৈশিষ্ট।
আরো জানতে দেখুন…
হাদীস কত প্রকার ও কি কি
বিভিন্ন ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে হাদিস সাধারণত ০৩ প্রকার। যথা, কাওলী হাদীস, ফিলী হাদীস ও তাকরীরী হাদীস।
০১.কাওলী হাদীসঃ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সালাহ সালামের মুখের পবিত্র বাণী বা কথাগুলোকে কাওলী হাদীস বলে।
০২. ফিলী হাদীসঃ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সালাহ সালাম যে কাজ গুলো স্বয়ং নিজে করেছেন এবং সাহাবীগণ তা বর্ণনা করেছেন তাই ফিলী হাদীস।
০৩. তাকরীরী হাদীসঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম সাহাবীদের যে সব কথাও কাজের প্রতি সমর্থন প্রদান করেছেন তাকে তাকরীরী হাদীস বলে।
প্রিয় পাঠক আশাকরি আপনারা আমাদের এই আর্টিকেল মাধ্যমে হাদিস শব্দের অর্থ কি হাদিস শব্দের উৎপত্তি এবং হাদিস কত প্রকার ও কি কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য সংগ্রহ করতে পেরে বেশ উপকৃত হয়েছেন। আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে সামান্য পরিমাণে ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার আশেপাশের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করে অন্যকে তথ্যগুলো সংগ্রহ করার সুযোগ করে দিবেন, ধন্যবাদ।
হাদিস সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
হাদিস এর অপর নাম কি?
উত্তরঃ পবিত্র ঐতিহ্য বা প্রতিবেদন। হাদিস রব্বানী বা হাদিসে ইলাহি (ঐশী হাদিস) ও বলা হয়। নবী মুহাম্মদের একটি বাণী (হাদিস) বোঝায় যেখানে অর্থ ঈশ্বরের দ্বারা প্রকাশিত হয়েছে এবং বাক্যাংশটি নবীর দ্বারা প্রণয়ন করা হয়েছে।
মুসলমানরা হাদিস অনুসরণ করে কেন?
উত্তরঃ মুসলমানরা সাধারণত বজায় রাখে যে ইসলামের সত্য ও সঠিক অনুশীলনের জন্য হাদিস একটি প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয়তা, কারণ এটি মুসলমানদের ইসলামিক অনুশীলন এবং বিশ্বাসের সূক্ষ্ম বিবরণ দেয় যেখানে কুরআন নীরব রয়েছে।
কুরআন ও হাদিসের মধ্যে পার্থক্য কি?
উত্তরঃ কুরআনকে মুহাম্মদকে দেওয়া আল্লাহর বাণী হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যেখানে হাদিসটিকে মুহাম্মদের প্রকৃত শব্দ বলে মনে করা হয়।
হাদিস ও সুন্নাহ কি?
উত্তরঃ সুন্নাহ, (আরবি: “অভ্যাসগত অভ্যাস”) এছাড়াও সুন্নার বানান, ইসলামী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যগত সামাজিক ও আইনগত প্রথা এবং অনুশীলনের অংশ। কোরান (ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ) এবং হাদিস (নবী মুহাম্মদের লিপিবদ্ধ বাণী ) এর পাশাপাশি এটি শরীয়াহ বা ইসলামী আইনের একটি প্রধান উৎস।
হাদিস কত প্রকার?
উত্তরঃ হাদিসগুলোকে মুতাওয়াতির (পরপর) এবং আহাদ (একক) এ বিস্তৃতভাবে ভাগ করা যায়। মুতাওয়াতির হাদিস এমন একটি হাদিস যার সত্যতা সন্দেহাতীত এবং আহাদ হাদিস এমন একটি হাদিস যা মুতাওয়াতিরের পর্যায়ে পৌঁছেনি। আহাদ হাদীসকে সহীহ ও যঈফ হাদীস দুই প্রকারে বিভক্ত করা হয়েছে।