আপনার কাছে কিছু টাকা সঞ্চয় রয়েছে, যেটা আপনি ভবিষ্যতে কোন কাজের জন্য ব্যবহার করতে চাচ্ছেন। আপনার সঞ্চয়কৃত টাকা ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখতে চাচ্ছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ফিক্সড ডিপোজিট করার জন্য কোন ব্যাংক সবচেয়ে ভাল? আপনার সঞ্চয়কৃত টাকা কোন ব্যাংকে রাখলে সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এই প্রশ্নের উত্তর জানতে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
ফিক্সড ডিপোজিট কি
আপনার উপার্জিত কষ্টের টাকা ভবিষ্যতে কোন কাজের জন্য ব্যাংকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আমানত হিসেবে জমা রাখাকে ফিক্সড ডিপোজিট বলে। অর্থাৎ, একটি নিদিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে জমা রাখাকে ফিক্সড ডিপোজিট বলে। আর ব্যাংকে জমা রাখা এই টাকার বিপরীতে ব্যাংক আপনাকে যে অতিরিক্ত টাকা বা সুদ দিয়ে থাকে তাকে এফডিআর(FDR) বলে।
ব্যাংকগুলোর সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী একজন ব্যক্তি সর্বনিম্ন ৩ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছর সময় পর্যন্ত টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখতে পারবে। সেক্ষেত্রে ওই জমাকৃত টাকার বিনিময় নির্দিষ্ট সময় শেষে ভোক্তা তার সঞ্চয়কৃত টাকার সাথে অতিরিক্ত নির্দিষ্ট পরিমান টাকা ব্যাংকের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।
ওই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি ভোক্তা তার টাকা লেনদেন করতে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে। সেক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে কোনো অতিরিক্ত টাকা দিবে না। অন্যান্য আমানতের তুলনায় ফিক্সড ডিপোজিট করে টাকা ব্যাংকে জমা রাখলে সুদের হার বেশি প্রদান করে।
আরো দেখুন…
ফিক্সড ডিপোজিট করার জন্য কোন ব্যাংক সবচেয়ে ভাল?
বাংলাদেশের প্রায় সরকারি-বেসরকারি সকল ব্যাংক গুলো ভোক্তা তার সঞ্চয়কৃত টাকার পরিমাণ ও সময়ের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট পরিমাণে সুদ প্রদান করে থাকে। যেমন, বাংলাদেশের মধ্যে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক সর্বাধিক ৯% হারে তাদের আমানতকারীদের সুদ দিচ্ছে। আমানতের মেয়াদ ৩ মাস থেকে ১ বছরের কম হলে ব্যাংকটি ৪.৫% থেকে ৫.৫% হারে সুদ দেয়। ১ বছর থেকে ৩ বছরের কম মেয়াদ হলে ৫.৭৫% থেকে ৭% পর্যন্ত আবার ৩ বছর বা তার বেশি হলে ৬% থেকে ৯% হারে সুদ দিচ্ছে।
আবার, বেসরকারি ব্যাংক গুলোর মধ্যে পদ্মা ব্যাংক সবচেয়ে বেশি ফিক্সড ডিপোজিটের বিপরীতের সুদ দিচ্ছে। ব্যাংকটি তিন মাস থেকে ছয় মাসের কম সময়ের জন্য ৭%, ছয় মাস থেকে ১ বছরের কম সময়ের জন্য ৭.২৫% ও ১ বছরের বেশি সময়ের জন্য ৭.৫% হারে সুদ দিয়ে থাকে। ব্যাংকে টাকা ডিপোজিট করার পূর্বে অবশ্যই ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিবেন।
চলুন এক নজরে দেখে নেই, ব্যাংকে টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করলে কোন ব্যাংক কেমন সুদ দেয়।
ব্যাংকের নাম | ৩ মাস | ৬ মাস | ১ বছর | ২ বছর | ৩ বছর |
অগ্রনী ব্যাংক | ৫.০০-৫.৬০ | ৫.০০-৫.৬০ | ৫.০০-৫.৬০ | ০ | ০ |
সোনালী ব্যাংক | ৪.৫০-৫.৬০ | ৪.৫০-৫.৬০ | ৪.৫০-৫.৬০ | ৪.৫০-৫.৬০ | ০ |
জনতা ব্যাংক | ৪.৭৫-৫.৭৫ | ৪.৭৫-৫.৭৫ | ৪.৭৫-৫.৭৫ | ০ | ০ |
ব্র্যাক ব্যাংক | ৪.০০-৫.৬০ | ৫.৫৫-৬.০০ | ৫.৫৫-৬.০০ | ৫.৫৫-৬.০০ | ৫.৫৫-৬.০০ |
রুপালী ব্যাংক | ৫.০০-৫.৬০ | ৫.০০-৫.৬০ | ৫.০০-৫.৬০ | ৫.০০-৫.৬০ | ৫.০০-৫.৬০ |
এবি ব্যাংক | ৫.৬০ | ৫.৬০ | ৫.৬০ | ৫.৬০ | ৫.৬০ |
তবে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে ব্যাংকের সঞ্চয়কৃত টাকার সুদের পরিমানের পরিবর্তন হতে পারে। সেক্ষেত্রে ব্যাংকে টাকা ডিপোজিট করার পূর্বে অবশ্যই ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিবেন।
আশাকরি আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভাল লেগেছে। আমাদের আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ থাকলে অবশ্যই আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
ব্যাংক সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
এফ ডি আর মানে কি?
উত্তরঃ স্ত্রী, স্বামী বা সন্তানের ভবিষ্যতের চিন্তা বা হঠাৎ বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ব্যাংকে টাকা জমানোর বিকল্প নেই। সচেতন মানুষ মাত্রই ব্যাংকে স্থায়ী আমানত করেন। এ ক্ষেত্রে জমাকারীকে ব্যাংক যে সুদ দেয়, তার নামই ফিক্সড ডিপোজিট রেট বা স্থায়ী আমানতে সুদের হার (এফডিআর)।
ফিক্সড ডিপোজিট এর সুবিধা কি?
উত্তরঃ লোকেরা কেন তাদের তহবিল একটি স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করে তার প্রধান কারণ হল নিশ্চিত রিটার্নের হার। একবার আপনি একটি স্থায়ী আমানত অ্যাকাউন্টে আপনার তহবিল বিনিয়োগ করলে, আপনি উল্লিখিত হারের রিটার্ন পাওয়ার নিশ্চয়তা পেতে পারেন।
এফডিআর ও এফডির মধ্যে পার্থক্য কি?
উত্তরঃ FD এর সুদের হার মেয়াদ এবং ব্যাঙ্কের সাথে পরিবর্তিত হয়। একটি FDR-এর মধ্যে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ব্যাঙ্ক গ্রাহককে যে সুদের হার অফার করছে তা থাকে ৷ এফডিআর-এ বিনিয়োগের মেয়াদ এবং পরিপক্কতার তারিখও উল্লেখ করা আছে।