স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদ

স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদ (চট্টগ্রামের পতেঙ্গা)

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা অঞ্চলের কর্ণফুলী নদীতে সংঘটিত এক মর্মান্তিক ঘটনায়, বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানের বিধ্বস্ত হওয়ার খবরে সারা দেশ শোকাহত। এই দুর্ঘটনায় জীবন হারান বীর পাইলট অসীম জাওয়াদ, যিনি স্কোয়াড্রন লিডার হিসেবে বিমানবাহিনীতে তার অসাধারণ সাহসিকতা ও দক্ষতার জন্য পরিচিত ছিলেন।

তিনি ২০১০ সালে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স একাডেমিতে যোগদান করেন এবং পরের বছর পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন পান। অসীম তার কর্মজীবনে বিভিন্ন যুদ্ধবিমান চালনা করেছেন এবং F-7MG1 যুদ্ধবিমানের অপারেশনাল পাইলট ও এলিমেন্ট লিডার হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি জাতিসংঘের মিশনে কঙ্গোতে নিযোজিত ছিলেন এবং চীন, ভারত, তুরস্ক ও পাকিস্তানে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নিয়েছেন।

তার অসামান্য দক্ষতা ও শ্রেষ্ঠত্বের জন্য তিনি ‘সোর্ড অফ অনার’ পেয়েছেন, যা সাভার ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে তিনি একমাত্র প্রাপ্ত ব্যক্তি। তার প্রশিক্ষণ দক্ষতার জন্য ‘মফিজ ট্রফি’ও লাভ করেন। ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টর’স স্কুল অব বিএএফ-এ স্টাফ ইনস্ট্রাক্টর হিসাবে তিনি বিমানবাহিনীর নবীন পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। গত ৯ মে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল এলাকায় তাঁর উড্ডয়নকালে বিমান বিধ্বস্ত হলে তিনি গুরুতর আহত হন।

পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ইয়াক-১৩০ (YAK 130) প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানটি যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে বিধ্বস্ত হয়, যা উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দেয় এবং বিমানে আগুন ধরে যায়। এরপর বিমানে থাকা দুই পাইলট প্যারাশুট ব্যবহার করে নেমে আসেন। শেষ পর্যন্ত বিমানটি কর্ণফুলী নদীতে পতিত হয়। এই দুর্ঘটনা ঘটে সার্জেন্ট জহুরুল হক বিমান ঘাঁটির নিকট থেকে যেখান থেকে বিমানটি উড়াল দিয়েছিল। এই ঘটনা বিমানবাহিনী ও দেশের জন্য এক বড় ক্ষতি বলে ধরা হচ্ছে।

Scroll to Top